বাংলা politieke দুনিয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে। আইন উপদেষ্টার মতে, এই মৃত্যু সাম্প্রতিক সরকারের, বিশেষ করে ফ্যাসিস্ট মুখোশ পরে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের প্ররোচনামূলক ও অন্যায় সিদ্ধান্তের ফল। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো রায় দিয়ে জেলখানায় আটকে রাখা হয়েছিল, যা নিঃসন্দেহে অহিংস ও নির্মম নির্যাতন। তার দেখানো বারবার আদালতের রায় ও সংবিধানের প্রতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দ্ব্যর্থকতা এই সত্যকে আরও স্পষ্ট করেছে। তিনি দাবি করেন, অবিচার ও নিপীড়নের এই পরিস্থিতিতে দেশের ইতিহাসের এই নেত্রীর মৃত্যুর জন্য পুরোপুরি দায়ী বর্তমান সরকারের প্রধান ব্যক্তি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, সরকার খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য সম্ভব সবকিছুই করেছে। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে সবসময় খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। যদি তার অবস্থা কিছুটা ভালো হতো, তাহলে হয়তো তাকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হতো। তবে, ভাগ্যক্রমে তিনি আমাদের ছেড়ে গেলেও, দেশের মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নিয়ে বিদায় নিলেন।
শীঘ্রই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আদালত ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে এক জরুরি বৈঠক করবে, যেখানে খালেদা জিয়ার জানাজার অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান, জানাজার স্থানসহ সব ধরনের সহযোগিতা অন্তর্বর্তী সরকার দিয়ে পাওয়া যাবে।
অতিরিক্তভাবে, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পাশে দাফন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় জানানো হয়, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা ও সকল আনুষ্ঠানিকতা নিশ্চিত করা হবে। এর আগে, বাংলার এই বড় নেত্রীর সঙ্গে শেষবারের মতো কথোপকথন হয়েছিল সশস্ত্র বাহিনী দিবসে, যেখানে তিনি দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, এই মুহূর্তে দেশের মানুষের হৃদয়ে খালেদা জিয়ার স্থান অটুট ও অক্ষয়। তার পাপড়ির মতো স্থায়িত্ব, তার জন্য দেশের প্রতিটি মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ভবিষ্যতেও অম্লান থেকে যাবে। তার জানাজার নামাজ যথাযথভাবে, শৃঙ্খলার সঙ্গে, ভাবগম্ভীর পরিবেশে সম্পন্ন করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
সুরক্ষা ও শোকের স্মারক হিসেবে জানানো হয়, ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন দিন সারাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে। এছাড়া, এ সময়ে সরকারি সব ধরনের অনুষ্ঠান ও সরকারি কর্মসূচি বন্ধ থাকবে।
মঙ্গলবার ভোর ৬টা দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, কিন্তু তার স্মৃতি, মূল্যবোধ এবং নেতৃত্বের প্রভাব চিরদিন বাংলার মানুষের হৃদয়ে অম্লান থাকবেন।
Leave a Reply